You are currently viewing নবম(৯ম) শ্রেণি  ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা ৪র্থ সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট

নবম(৯ম) শ্রেণি ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা ৪র্থ সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট

Table of Contents

 

নবম(৯ম) শ্রেণি  ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা ৪র্থ সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট

নবম(৯ম) শ্রেণি  ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা ৪র্থ সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট

শিরোনামঃ ইংরেজ শাসনামলে বাংলার রাজনৈতিক পরিবর্তন।

    বি:দ্রঃ উক্ত অ্যাসাইনমেন্টটির বিষয় টা এমনই যে উত্তরটা বড় হবে। তবে যথাসাদ্ধ ছোট করা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা তোমরা ইচ্ছা করলে আরো ছোট করে লিখতে পারো। তবে সেটা অবশ্যই অর্থ ঠিক রেখে।

    অ্যসাইনমেন্ট শুরু


    ইংরেজ শাসনামলে বাংলার রাজনৈতিক পরিবর্তনের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেওয়া হলো:

    বাংলায় ইংরেজ শাসনের সুচনাপর্ব:

    অতীতকাল থেকে বাংলা অঞ্চল ধন-সম্পদে পূর্ণ ছিল। জীবনযাপনের জন্য যা কিছু প্রয়োজন সবকিছুই তখন এখানে পাওয়া যেত। বাণিজ্যের জন্য এটা ছিল একটি উর্বর অঞ্চল। নানা ধরণের বাণিজ্যিক পণ্য, মসলা এবং কুটির শিল্পের পাশাপাশি ছিল জগৎ বিখ্যাত মসলিন কাপড় । এসব পণ্যের আকর্ষণেই অনেকেই এদেশের সঙ্গে বাণিজ্য করতে এসেছিল । পর্তুগিজ, ওলান্দাজ বা ডাচ, দিনেমার, ইংরোজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এদেশে এসেছিল ব্যবসা-বাণিজ্য করার জন্য এদেশে আগত অন্যান্য ইউরোপীয় কোম্পানিগুলোকে পরাজিত করে এবং স্থানীয় শাসকদের বিরুদ্ধে নানাভাবে ষড়যন্ত্র করে এবং এদেশে স্থায়ীভাবে গেড়ে বসে এবং ১৯০ বছর স্বাসন পরিচালনা করে।

    বাংলায় ইংরেজদের আগমন: 

    ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি নামে একটি বাণিজ্যিক কোম্পানি গঠন করে, ইংল্যান্ডের একদল বণিক ১৬০০ খিস্টাব্দে রাণী এলিজাবেথের কাছ থেকে ১৫ বছর মেয়াদি প্রাচ্যে একচেটিয়া বাণিজ্য করার সনদপত্র লাভ করে। তারা বাণিজ্য সুবিধা লাভের আশায় সম্রাট আকবরের দরবারে আসে । এরপর ক্যাপ্টেন হকিন্স ১৬০৮ খ্রিস্টাব্দে জেমসের সুপারিশপত্র নিয়ে বাণিজ্য সম্প্রসারণের লক্ষ্যে স্শ্রাট জাহাঙ্গীরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তাঁর অনুমতি নিয়ে ১৬১২ খ্রিস্টাব্দে সুরাটে বাণিজ্য কুঠি স্থাপন করে । ১৬১৯ সালের মধ্যে কোম্পানি সুরাট, আগ্রা, আহমেদাবাদ প্রভৃতি স্থানে বাণিজ্য কুঠি স্থাপন করে তাদের ভিত্তি মজবুত করে তোলে । কোম্পানি তার দ্বিতীয় বাণিজ্য কুঠি মসলিপট্টমে, তৃতীয় বালানোরে, ১৬৫৮ খ্রিস্টাব্দে হুগলিতে, তারপর কাশিমবাজার, ঢাকা, মালদহে বাণিজ্য কুঠি নির্মাণ করে এবং বাংলায় তাদের আগমনকে সুদৃঢ় করে।

    জব চার্ণক নামে আরেকজন ইংরেজ ১৬৯০ খ্রিস্টাব্দে ১২০০ টাকার বিনিময়ে কোলকাতা, সুতানটি ও গোবিন্দপুর নামে তিনটি গ্রামের জমিদারী স্বত্ত লাভ করেন । ভাগীরখী নদীর তীরের এর তিনটি গ্রামকে কেন্দ্র করেই পরবর্তীকালে কোলকাতা নগরীর জন্ম হয়। এখানেই কোম্পানি ১৭০০ খ্রিস্টাব্দে ইল্যন্ডের রাজা তৃতীয় উইলিয়ামের নাম অনুসারে ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ নিমা্ণ করে । ধীরে ধীরে এটি বাণিজ্যিক কাজে ও রাজনৈতিক কাজে পরিচালনার কেন্দ্র বিন্দু হিসেবে গড়ে ওঠে।

    পলাশীরি যুদ্ধ:

    বাংলার নবার সিরাজউদ্দৌলাকে শেষ পর্যন্ত ক্ষুব্ধ করে তোলে ইংরেজদের উদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ ও অবাধ্যতা এবং এর সমাধান শেষপর্যন্ত যুদ্ধে রুপ নেয় যা ইতিহাসে পলাশীর যুদ্ধ নামে খ্যাত। আলীবর্দী খান ১৭৪০ থেকে ১৭৫৬ খ্রিস্টাব্দ পর্যশ্ত বাংলা, বিহার, উড়িষ্যার নবাব ছিলেন । তিনি সুকৌশলে ইংরেজ বণিক কোম্পানিকে নিয়ন্ত্রণ করেছিলেন । আলীবদীঁ খান মৃত্যুর আগে তাঁর কনিষ্ঠ কন্যা আমেনা বেগমের পুত্র সিরাজউদ্দৌলাকে বাংলার সিংহাননের উত্তরাধিকার মনোনীত করে যান। মাত্র ২২ বছর বয়সে নবাবের ক্ষমতা গ্রহণ করে সিরাজউদ্দৌলা নানামুখী ষড়যন্ত্র ও সমস্যার মুখোমুখি হন। তাঁর প্রথম সমস্যা ছিল তার বড় খালা ঘনেটি বেগম যিনি সিরাজের নবাব হওয়া মেনে নিতে পারেন নি। ঘসেটি বেগমের সঙ্গে যোগ দেন তার দেওয়ান রাজা রাজবল্লভ, পূর্ণিয়ার শাসনকর্তা সিরাজের খালাতো ভাই শওকত জঙ্গ, ব্যবসায়ঢ জগৎশেঠ, রায়দুর্লভ, এবং নিরাজের সেনাপতি মীরজাফর প্রমুখ ।

    পলাশীর যুদ্ধের কারণসমূহঃ 

    ক) প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী নিরাজউদ্দৌলা সিংহাসনে বসার পর ইংরেজরা তাকে কোনো উপঠৌকন পাঠায়নি এবং কোনো সৌজন্যমূলক সাক্ষাতও করেনি । এতে নবার ক্ষুব্ধ হন ।

    খ) নবাবের নিষেধাজ্ঞা সত্তেও তারা কলকাতায় দুর্গ নিমণ অব্যাহত রাখে ।

    গ) ইংরেজ কোম্পানি দস্তকের অপব্যবহার করলে দেশীয় বণিকরা ক্ষতিগ্রশ্ত হয়। নবাব নিষেধ করলেও ইংরেজরা তাঁর আদেশ অগ্রাহ্য করে ।

    ঘ) চুক্তি ভঙ্গ করে ইংরেজরা নবাবকে কর দিকে অস্বীকৃতি জানায় । তাছাড়া তারা বাংলার জনগণকে নির্যাতন করতে শুরু করে।

    উ) রাজা রাজবল্পভের পুত্র কৃষ্ণদাস প্রচুর ধনসম্পদ নিয়ে ইংরেজদের কাছে আশ্রয় নেয় । তাকে ফেরত দেয়ার জন্য নবাব ইংরেজদের কাছে দূত পাঠালেও তারা দূতকে অপমান করে তাড়িয়ে দেয়। এছাড়া নবাবের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে ইংরেজরা শওকত জঙ্গকে সমর্থন দেয়।

    পলাশীর যুদ্ধে নবাবের পতনের কারণ:

    ক) যুদ্ধের সময় সেনাপতি মীরজাফরের অনহযোগিতা ও বিশ্বাসঘাতকতা ।

    খ) নবাবের লেনাপতি থেকে সভানদ পর্যন্ত সবাই দেশের স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে ব্যক্তি স্বার্থকে বড় করে দেখা।

    গ) যুদ্ধক্ষেত্রে নবাবের সঠিক নিদ্ধাম্ত গ্রহণে ব্যর্থতা ।

    ঘ) সেলাপতি মীরজাফরের ঘড়যন্ত্রের কথা জানা সন্তেও তার ওপর নির্ভর করা।

    ও) নবাবের শত্তুপক্ষ ছিল এক্যবদ্ধ এবং রণকৌশল ছিল উন্নততর ৷

    চ) রবার্ট ক্লাইভ ছিল দূরদর্শী, সুষ্ষ্ষ ও ক্ট বুদ্ধিসম্পন্ন ।

    পলাশীর যুদ্ধের ফল:

    পলাশীর যুদ্ধের ফলে বাংলায় প্রত্যক্ষ উপনিবেশিক শাননের পথ সুগম হয় এবং ইংরেজরা বাংলায় একচেটিয়া ব্যবসা বাণিজ্যের অধিকার লাভ করে। ফরাসীরা এদেশ থেকে বিদায় নিতে বাধ্য হয়। পলাশী যুদ্ধের সুদূরপ্রসারী পরিণতি ছিল সমগ্র উপমহাদেশে কোম্পানির শাসন প্রতিষ্ঠা।

    বক্সারের যুদ্ধ ও ফলাফলঃ

    ইংরেজরা মীরজাফরকে সিংহাসনে বসালেও তিনি কোম্পানির প্রাপ্য অর্থ প্রদানে ব্যর্থ হয়ে দেউলিয়া সম্পর্ক গড়ে তোলে যা ইংরেজরা জানতে পারে। ১৭৬০ খ্রিস্টাব্দে ইংরেজ গভর্নর ভান্সিটার্ট মীরজাফরকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে মীর কাশিমকে শর্তসাপেক্ষে সিংহাসনে বসান । মীর কাশিম উঠেছিল।

    ইত্রেজদের সাথে গিরিয়া, কাটোয় ও উদয়নালার যুদ্ধে মীরকাশিম শোচনীয়পরাজিত হওয়ায় পর ইংরেজরা মীর জাফরকে পুনরায় বাংলার নিংহাননে বলায় । মীরকাশিম পরাজিত হয়েও হতাশ হননি । তিনি অযোধ্যার নবাব সুজাউদ্দৌলা এবং মুঘল সম্রাট শাহ আলমের সঙ্গে একত্রিত হয়ে ১৭৬৪ খ্রিস্টাব্দে বিহারের বক্সার নামক স্থানে ইধরেজদের বিরুদ্ধে চরম শক্তি পরীক্ষার অবতীণ হন। দর্ভাগ্যক্রমে সম্মিলিত বাহিনী মেজর মনরোর কাছে তিনি চরমভাবে পরাজিত হন। এবং  ইংরেজদের শক্তি বৃদ্ধি হয়।

    কোম্পানির দেওয়ানী লাভঃ

    ১৭৬৫ সালে মীরজাফরের মৃত্যুর পর তার পুত্র নাজিম-উদ-দৌলাকে শর্ত সাপেক্ষে বাংলার সিংহাসনে বসানো হয়। এসময়ে ইংরেজ কোম্পানি মুঘল সম্রাটের কাছ থেকে বাংলার রাজস্ব আদায়ের সম্পূর্ণ দায়িতু অর্থাৎ দেওয়ানি লাভ করে। ১৭৬৫ খ্রিস্টাব্দে দেওয়ানি লাভের পর প্রকৃতপক্ষে ইংরেজরাই বাংলার সত্যিকার শাসকরুপে আত্মপ্রকাশ করে ।

    দ্বৈত শাসন:

    রবার্ট ক্লাইড দেওয়ানী সনদের নামে বাংলার সম্পদ লুষ্ঠনের একচেটিয়া ক্ষমতা লাভ করে । দিল্লী কর্তৃক বিদেশি বণিক কোম্পানিকে এই অভাবিত ক্ষমতা প্রদানে বৃষ্টি হয় দ্বৈত শাসনের । অর্থাৎ যাতে করে কোম্পানি লাভ করে দায়িতুহীন ক্ষমতা আর নবাব পরিণত হন ক্ষমতাহীন শানকে । ১৭৭০ খ্রিস্টাব্দে (১১৭৬ বঙ্গাব্দ) ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ দেখা দেয় যা ইতিহালে ‘ছিয়ান্তরের মম্বন্তর”‘ নামে পরিচিত । এই দুর্ভিক্ষে বাংলার এক-তৃতীয়াংশ জনসংখ্যার মৃত্যু হয় । দুর্ভিক্ষের বছরও কর আদায় সমভাবে চলতে থাকে। দ্বৈতশাসন ব্যবস্থায় নবাবের হাতে পর্যাপ্ত অর্থ না থাকায় প্রশাসন পরিচালনায় বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। এই পরিস্থিতিতে ১৭৭২ খ্রিস্টাব্দে ওয়ারেন হেস্টিংন দ্বৈত শাসন ব্যবস্থার অবসান ঘটান ।

    চিরস্থায়ী বন্দোবস্তঃ

    লর্ড কর্ণওয়ালিসকে কোম্পানীর শাসন দুনীতিমুক্ত ও সুসংগঠিত করতে ১৭৮৬ খ্রিস্টাব্দে ভারতের গভর্নর জেনারেল ও লেনা প্রধানের দায়িত্ব দিয়ে পাঠানো হয়। তিনি ১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত বা স্থায়ী ভূমি ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন। এ বছর ২২ মার্চ নির্দিষ্ট রাজস্ব পরিশোধের বিনিময়ে বাংলা, বিহার, উড়িষ্যার জমিদারগণকে নিজ নিজ জামির উপর স্থায়ী মালিকানা দান করে যে বন্দবস্ত চালু করা হয় তাকে চিরস্থয়ী বন্দবস্ত বলে।

    ইংরেজ শাসন আমলে বাংলায় প্রতিরোধ:

    বাংলার ঘরে অন্ন-বস্ত্রের প্রাচুর্য ছিল না, তবে অভাবও ছিল না। অভাব ছিলনা আনন্দ-উৎসবের ইংরেজদের আগমনে প্রথমে ধ্বংস হয় বাংলার কুটির শিল্প । তারপর তাদের নজর পড়ে এদেশের উর্বর জমির উপর ৷ অতিরিক্ত অর্থের লোভে ভূমি রাজন্ব আদায়ে একের পর এক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলতে থাকে। তীব্র শোষণের শিকার অসহায় কৃষক-সাধারণ মানুষের বিদ্রোহ করা ছাড়া কোনো উপায় থাকে না। এ বিদ্রোহ ক্রমাগত চলতে থাকে আঠারো শতকের শেষার্ধ থেকে উনিশ শতকের শেষার্ধ পর্যস্ত।

    ফকির-সন্ন্যাসী আন্দোলনঃ

    বাংলার ফকির-সন্ন্যাসী আন্দোলন ছিল একটি ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন ৷ আঠারো শতকের শেষের দিকে এই আন্দোলনের শুরু । এর আগে মীর কাশিমের ডাকে সাড়া দিয়ে ফকির-সন্ন্যানীরা নবাবের পক্ষে যুদ্ধ করে। যুদ্ধে পরাজিত হয়ে মীর কাশিম পালিয়ে গেলেও ফকির-সন্ন্যাসীরা তাদের ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন চালিয়ে যেতে থাকে । ইংরেজ সরকার তাদের চলাফেরা ও ধরমীয় কার্যক্রম বাধা দিতে থাকে ৷ তাদেরকে দস্যু বলে আখ্যায়িত করে। ফলে ফকির-সন্ন্যানীরা ইংরেজদের বিরুদ্ধে দীর্ঘ আন্দোলনে অবতীর্ণ হয়। বিদ্রোহী ফকির দলের নেতা ছিলেন মজনু শাহ। আর নন্ন্যানীদের নেতার নাম ছিল ভবানী পাঠক । ১৭৬০ খ্রিস্টাব্দে পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলায় সন্ন্যাসীরা ইংরেজদের বিরুদ্ধে প্রথম বিদ্রোহ শুরু করে । ১৭৮৭ সালে তার মূত্যতে ফকির বিদ্রহের অবসান ঘটে।

    তিতুমীরের সংগ্রামঃ

    মীর নিসার আলী ওরফে তিতুমীর চব্বিশ পরগণা জেলার বারাসাত মহকুমার চাঁদপুরে জন্ম গ্রহণ করেন। উনিশ শতকে তাঁর নেতৃতে বাংলার ওয়াহাবিরা সংগঠিত হয়েছিল । ১৭২৭ খ্রিস্টাব্দে হজ করার পর তিতুমীর ধর্মীয় সংস্কার আন্দোলন শুরু করেন যে আন্দোলনে বহু মুসলমান বিশেষ করে চব্বিশ পরগনা এবং নদীয় জেলার বহু কৃষক, তাঁতী সাড়া দেয়। ফলে জমিদাররা মুসলমান প্রজাদের উপর নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞা জারি করে। শান্ত আলোচনায় ব্যর্থ হয়ে তিতুমীর ও তার অনুসারীরা সশস্ত্র প্রতিরোধের পথ অবলম্বন করেন । ১৮৩১ খ্রিস্টাব্দে লারিকেলবাড়িয়া গ্রামে তিতুমীর তাঁর প্রধান ঘাঁটি স্থাপন করেন । নিমর্ণ করেন শক্তিশালী এক বাঁশের কেল্লা । গোলাম মাসুমের নেতৃত্বে গড়ে তোলেন সুদক্ষ শক্তিশালী লাঠিয়াল বাহিনী | সংস্কারের আন্দোলন একটি ব্যাপক কৃষক আন্দোলনে রুপ নেয়। ১৮৩১ খ্রিস্টাব্দে ইংরেজ সরকারের সাথে লড়াই করে পরাজিত হয় তিতুমীরের বাহিনী । তিনি নিহত হন। গোলার আঘাতে বাঁশের কেল্লা উড়ে যায়। তাঁর বাঁশের কেল্লা ছিল দুঃসাহস আর দেশপ্রেমের প্রতীক, যা যুগে যুগে বাঙালিকে অন্যায়-অত্যাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াতে শেখাবে।

    নীল বিদ্রোহ:

    ইংরেজরা এদেশে বাণিজোর উদ্দেশে আসে ।ঐ সময় নীল ব্যবসা ছিল খুবই লাভজনক । কাপড় রং করার জন্য ব্রিটেনে নীলের চাহিদা খুব বেড়ে যায় । ১৭৭০ থেকে ১৭৮০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে বাংলাদেশে নীলচাষ শুরু হয় । কৃষকদের নীলচাষের জন্য অগ্রীম অর্থ (দাদন) গ্রহণে বাধ্য করা হতো । আর একবার এই দাদন গ্রহণ করলে সুদ-আসলে যতই কৃষকরা খণ পরিশোধ করুক না কেন, বংশ পরম্পরায় কোনো দিনই ঋণ শোধ হতো না। নীলচাষে কৃষকরা রাজি না হলে তাদের উপর চরম অত্যাচার চালানো হতো । এমনকি অবাধ্য নীলচাষিকে হত্যা করতেও দ্বিধা করা হতো না।

    শেষ পর্যশ্ত দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া লীল চাষিরা ১৮৫৯ খ্রিস্টাব্দে প্রচন্ড বিদ্রোহে ফেটে পড়ে । নীল বিদ্রোহের নেতৃত্ দেন যশোরের নবীন মধাব ও বেনী মাধব নামে দুই ভাই । হুগলীতে নেতৃত্ব দেন বৈদ্যনাথ ও বিশ্বনাথ সদরি ৷ নদীয়ায় ছিলেন মেঘনা লদরি এবং নদীয়ার চৌগাছায় বিষ্ণুচরণ বিশ্বাস ও দিগম্বর বিশ্বাস নামে দুই ভাই । স্থানীয় পর্যায়ের এই নেতৃড়ে বাংলার কৃষক বিদ্রোহের আগুন দ্বালে উঠে। কৃষকরা নীল চাষ না করার পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নেয় । শেষ পর্যন্ত বাংলার সংগ্রামী কৃষকদের জয় হয়। 

    ১৮৬১সালে কোম্পানী নীল কমিশন গঠন করেন। এই কমিশন নীল চাষকে চাষীদের ইচ্চধীন করে দেন। ১৮৯২ সালে এদেশে নীল চাষ চিরতর বন্ধ হয়ে যায়। 

    ফরায়েজি আন্দোলন:

    ফরায়েজি আন্দোলনের নেতা হাজী শরীয়তউল্লাহ বিশ বছর মক্কায় অবস্থান করে দেশে ফিরে বুঝতে পারেন যে. বাংলার মুসলমানরা ইনলামের প্রকৃত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত । তিনি ইসলাম ধর্মকে কুসংস্কার আর অনইসলামিক অনাচারমুক্ত করতে তিনি দৃড়প্রতিজ্ঞ হন এবং সংস্কার আন্দোনের সূত্রপাত করেন । এই ধমীয় আন্দোলনের নামই “ফরায়েজি আন্দোলন” ।

    হাজী শরীয়তউল্লাহ লাঠিয়াল বাহিনী গঠন করেন । ১৮৩৯ খ্রিস্টাব্দে তার উপর পুলিশি নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। ১৮৪০ সালে তার মৃত্যুর পর সংগঠনের হাল ধরেন দুুদু মিয়া । দুদু মিয়া তাঁর অনুসারীদের নিয়ে দীর্ঘকালব্যাপী জমিদার, নীলকর সরকারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালিয়ে যান । দুদু মিয়ার হাত ধরে ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে ভারতের প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধের আগুন ফুলে উঠলে ইংরেজ সরকার তাকে রাজনৈতিক বন্দী হিসেবে কলকাতার কারাগারে আটকে রাখে । ১৮৬০ খ্রিস্টাব্দে তিনি মুক্তি পান এবং ১৮৬২ খ্রিস্টাব্দে এই দেশপ্রেমিক বীরের মৃত্যু ঘটে। তাঁর মৃত্যুর পর যোগ্য নেতৃত্বের অভাবে ফরায়েজি আন্দোলন দুর্বল হয়ে পড়ে।

    নবজাগরণ ও সংস্কার আন্দোলন:

    ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দে পলাশী মুদ্ধের পর এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অবস্থার পরিবর্তনের সুচনা হয় । অষ্টাদশ শতকের শেষদিকে ইংল্যান্ডে শিল্প বিপ্লব এবং ফ্রান্সে ফরাসি বিপ্লবের প্রভাবও এসে পড়ে এ অঞ্চলের রাজনীতি ও অর্থনীতিতে । এ সময়ে বাংলার কিছুনংখ্যক ব্যক্তি এই বৈপ্লবিক পরিবর্তনের সংস্পর্শে আনেন । তাঁরাই বাংলায় রেনেসাঁ বা নবজাগরণের সূচনা করেন । 

    রাজা রামমোহন রায়:

    বাংলার নবজাগরণের সৃষ্টা ভারতের প্রথম আধুনিক পুরুষ ছিলেন রাজা রামমোহন রায় । অসাধারণ পান্ডিত্যের অধিকারী ছিলেন তিনি । তিনি হিন্দু সমাজের তীদাহ, বাল্যবিবাহ, কৌলিন্য প্রথা, মুর্ভিপূজা ও অন্যান্য কুনংস্কার দূর করতে প্রচেষ্টা চালান । ১৮২৮ খ্রিস্টাব্দের ২০ আগস্ট তিনি ব্রাহ্মনমাজ প্রতিষ্ঠা করেন। ১৮২২ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা “জ্যাংলো হিন্দু স্কুল” প্রতিষ্ঠা করেন তিনি যেখানে ইংরেজি, দর্শন, আধুনিক বিজ্ঞান পড়াবার ব্যবস্থা ছিল৷ ভারতীয়দের শিক্ষার জন্য ইংরেজ সরকার কর্তৃক নিরধারিত ১ লক্ষ টাকা তিনি সংস্কৃত ও মাদ্রাসা শিক্ষায় ব্যয় না করে আধুনিক শিক্ষায় ব্যয় করার জন্যও তিনি আবেদন করেন। ১৮৩৩ সালে তার মৃত্যুর পর ১৮৩৫ ধরস্টাব্দে তাঁর স্বপ্ন সফল হয়। ভারতীয়দের

    ডিরোজিও ও ইয়াং বেঙ্গল মুভমেন্ট:

    পর্তুগিজ বাবা এবং বাঙালি মায়ের সন্তান হেনরি লুই ডিরোজিও ছিলেন রাজা রামমোহন রায়ের যোগ্য উত্তরসূরি । তিনি ছিলেন ‘রেনেসী’ যুগে বাঙালি যুব সমাজের মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টিকারী “ইয়ং বেঙ্ল” আন্দোলনের প্রবক্তা ।

    উনিশ শতকের প্রথমার্ধে জুড়ে ছিল রাজা রামমোহন রায়ের আন্দোলনের ধারা । দৃঢ়ভাবে সে ধারাকে বাঁচিয়ে রেখেছিল হিন্দু কলেজের প্রতিভাবান ছাত্রবৃন্দ, ইয়ং বেঙ্গল আন্দোলনের মাধ্যমে । ধার নেতৃত্বে ছিলেন হিন্দু কলেজের তরুণ অধ্যাপক হেনরি লুইন ডিরোজিও। তরুণ সমাজের পুরোনো ধ্যান ধারণা পাল্টে দিতে ডিরোজিও ১৮২৮ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত একাডেমি অ্যসোসিয়েশন গুরুত্পূর্ণ ভূমিকা রাখে । ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দে ডিরোজিওর অনুপ্রেরণায় হিন্দু কলেজের ছাত্ররা ‘পার্থেনন’ নামে একটি ইংরেজি সান্তাহিক পত্রিকা প্রকাশ করে । ১৮৩১ খ্রিস্টাব্দে মাত্র তেইশ বছর বয়সে তিনি মৃত্যুবরণ করেন ।

    ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮২০-১৮৯১):

    পান্ডিত্য, শিক্ষা বিস্তার, সমাজ সংস্কার, দয়াবদ্ধতা ও তেজস্বিয়তায় ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ছিলেন উনিশ শতকের বাংলায় একক ব্যক্তিতৃ । তাঁর প্রজ্ঞা ছিল প্রাচীন ভারতীয় ঋষির মতো, শৌর্য ছিল ইংরেজদের মতো, আর হৃদয় ছিল বাংলার কোমলমতি মায়েদের মতো ।

    দেশে প্রচলিত নানা ধরনের কুসংস্কারের বিরুদ্ধে তিনি রুখে দাঁড়ান। তিনি কন্যাশিশু হত্যা, বহুবিবাহ প্রথার বিরুদ্ধে সংগ্রামে লিপ্ত হন । তাঁর কঠোর অবস্থান ও নিরলস প্রচেষ্টার কারণে ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে বিধবা বিবাহ আইন পাশ হয়। তিনি দান-দাক্ষিণ্যের জন্য খ্যাত ছিলেন। এ কারণে তাঁকে দয়ার সাগরও বলা হতো।

    হাজী মুহম্মদ মহসীন (১৭৩২-১৮১২):

    হাজী মুহাম্মদ মহসীনের আরবি, ফারসি, উর্দু, ইংরেজি, ইতিহাস, বীজগণিতে ছিল অগাধ পান্ডিত্য। ১৮০৩ খ্রিস্টাব্দে তাঁর একমাত্র বোনের মৃত্যুর পর নিঃসন্তান বোনের বিশাল সম্পত্তির মালিক হন তিনি। তিনি তাঁর সমুদয় অর্থ শিক্ষা বিস্তার, চিকিৎসা এবং দরিদ্র মানুষের জন্য ব্যয় করেন। তিনি হুগলিতে একটি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন । ঢাকা, চট্টগ্রাম, যশোর প্রভৃতি স্থানের মাদ্রাসার উন্নতি সাধনের উদ্দেশ্যে প্রচুর অর্থ দান করেন । মৃত্যুর ছয় বছর পূর্বে ১৮০৬ খ্রিস্টাব্দে একটি হাজার মুসলমান তরুণ উচ্চ-শিক্ষা লাভের সুযোগ পায় ।

    নওয়াব আবদুল লতিফ (১৮২৮-১৮৯৩):

    বাঙালি মুনলমানদের মধ্যে ইংরেজি শিক্ষার বিস্তার এবং শিক্ষার গুরুত্ত বুঝতে পেরে নওয়াব আবদুল লতিফ মুনলমানদের আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে তাদের কল্যাণের জন্য প্রচেষ্টা চালান । তিনি ১৮৫৩ খ্রিস্টাব্দে ‘মুনলমান ছাত্রদের পক্ষে ইংরেজি শিক্ষার সুফল” শীর্ষক এক রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করেন। তাঁর প্রচেষ্টায় কলকাতা মাদ্রানায় জ্যাংলো-পার্সিয়ান বিভাগ খোলা হয়। উচ্চ-শিক্ষা গ্রহনে প্রভৃতি স্থানে মাদ্রানা স্থাপন করেন । আবদুল লতিফের উল্লেখযোগ্য কৃতিত হচ্ছে ১৮৬৩ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত মোহামেডান লিটারারি নোলাইটি বা মুনলিম সাহিত্য-সমাজ।

    সৈয়দ আমীর আলী (১৮৪৯-১৯২৮):

    উনিশ শতকের শেষদিকে বাংলার মুনলমান সমাজের নবজাগরণের যিনি লবচেয়ে গুবৃতপূর্ণ অবদান রেখেছিলেন তিনি হলেন নৈয়দ আমীর আলী । তিনি পাশ্চাত্য শিক্ষার মাধ্যমে বাঙালি মুসলমানদের সামাজিক ও বৈষয়িক উন্নতি করতে চেয়েছেন । পাশাপাশি তিনি তাদের রাজনৈতিকভাবেও সচেতন করতে চেয়েছেন ।

    তাঁর বিখ্যাত ছুটি গ্রন্থ ‘The Spirit Of Islam’ এবং ‘A Short History of the Saracens’ এ ইসলাম ধর্মের বিজ্ঞানসম্মত ব্যাখ্যা ও ইসলামের অত্রীত গৌরবের কথা তুলে ধরা হয়েছে। তিনি ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে সুনলীম লীগ প্রতিষ্ঠাকে স্বাগত জানান । নৈয়দ আমীর আলী নারী অধিকারের বিষয়েও সচেতন ছিলেন ।

    বেগম রোকেয়া (১৮৮০-১৯৩২):

    বিশ শতকের শুরুতে যখন ঘরে ঘরে শিক্ষার আলো জ্বলছে, বাঙালি মুদলমান মেয়েরা তখনও পিছিয়ে ছিল। সুনলমান সমাজের মেয়েরা নব অধিকার থেকে বঞ্চিত ছিল । লেখাপড়া শেখা তাদের জন্য একরকম নিষিদ্ধই ছিল! সমাজ ধর্মের নামে তাদের রাখা হাতো পর্দার আড়ালে গৃহবন্দী করে। মুসলমান মেয়েদের এই বন্দি দশা থেকে যিনি মুক্তির ডাক দিলেন, তিনি বেগম রোকেয়া । রক্ষণশীল পরিবারে জন্ম নিলেও বড় ডাইয়ের একান্ত উৎসাহে তিনি উর্দু, আরবি, ফারসি, বাংলা ও ইংরেজি ভাষা শিক্ষা লাড করেন । তিনি সমাজের কুসংস্কার, নারী সমাজের অবহেলা-বঞ্চনার করুণ চিত্র নিজ চোখে দেখেছেন । যা উপলব্ধি করেছেন, তা-ই তিনি ভার লেখার মধ্যে তুলে ধরছেন । স্বামীর নামে ডাগলপুরে একটি প্রাথমিক বালিকা বিদ্যালয় স্থাপন করেন। ১৯১১ খ্রিস্টাব্দে তিনি কলকাতার সাখাওয়াত মেমোরিয়াল উর্দু প্রাইমারি স্কুল স্থাপন করেন । নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে তিনি কলকাতায় আঞ্জুমান খাওয়াতিনে ইসলাম (মুসলিম মহিলা সমিতি) প্রতিষ্ঠা করেন।

    ইংরেজ শাসন আমলে বাংলার স্বাধীকার আন্দোলন:

    বাঙালিরা কখনই বিদেশী ইংরেজ শাসকদের মেনে নেয়নি। ফলে বিভিন্ন সময়ে বাংলার স্বাধীকার আন্দোলন গড়ে ওঠে । যার মধ্যে অন্যতম বাংলার সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলন ।

    বাংলার সশস্ত্র বিপ্রবী আন্দোলন (১৯১১-১৯৩০):

    বয়কট ও স্বদেশী আন্দোলনের ব্যর্থতা বাংলার স্বাধীনতাকামী দেশপ্রেমিক যুব সমাজকে সশস্ত্র বিপ্লবের পথে ঠেলে দেয়। সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন করার যে গোপন তৎপরতার সূত্রপাত ঘটে, তাকেই বাংলার সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলন বলা হয়ে থাকে । ১৯১১ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দ পর্যশ্ত এই সংগ্রাম জোরদার হলেও এর আগেই সংগ্রাম শুরু হয়েছিল । ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দে ইংরেজ ম্যাজিস্ট্রেট কিংসফোর্ডকে হত্যা করার জন্য ক্ষুদিরামের বোমা হামলার মধ্য দিয়ে সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলন আত্মপ্রকাশ করে । এই আন্দোলন মূলত শেষ হয় ১৯৩০ খ্রিস্টান্দে। তবে এর পরেও বিচ্ছিন্নভাবে সশস্ত্র আক্রমণের ঘটনা ঘটে ।

    মহাত্মা গান্ধী ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে শুবু করেন আইন অমান্য আন্দোলন । এই আন্দোলনের সঙ্গে সঙ্গে বাংলায় বিপ্লবী কর্মকান্ড বৃদ্ধি পায়। বাঙালি তরুণরা মৃত্্যুভয়কে তুচ্ছ করে বারবার সশস্ত্র আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছে । এমন একজন দুঃনাহসী বিপ্রবী ছিলেন চট্টগ্রামের মাস্টারদা, যাঁর আসল নাম সূর্য সেন (১৮৯৪-১৯৩৪)। তিনি চট্টগ্রামকে ব্রিটিশ শাসনযুক্ত করার জন্য গঠন করেন চট্টগ্রাম বিপ্রবী বাহিনী । পরে এই আত্মঘাতী বাহিনীর নাম হয় ‘চিটাগাঙ রিপাবলিকান আর্মি’। সূর্য সেনের বিপ্লবী বাহিনীতে নারী যোদ্ধাও ছিলেন । তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন কল্পনা দত্ত ও প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার।

    সশস্ত্র আন্দোলন ব্যর্থতার কারণ:

    সশস্ত্র আন্দোলনের ব্যর্থতার পেছনে যেসব কারণ রয়েছে তার প্রধান কারণ হচ্ছে গণবিচ্ছিন্নতা । সাধারণ জনগণের এর সম্পর্কে ধারণা ছিলনা । সাধারণ মানুষের কাছে সশস্ত্র আক্রমণ, বোমাবাজি, হত্যাকান্ড এ সবই ছিল আতঙ্ক আর ভয়ের কারণ ।

    সশস্ত্র আন্দোলন সফল না হলেও বিপ্লবীদের আত্মাহুতি, দেশপ্রেম, সাহস পরাধীন বাংলা তথা ভারতবাসীকে স্বাধীনতার পথ দেখিয়েছিল। এ আন্দোলন প্রত্যক্ষভাবে সফল না হলেও বিপ্লবীদের আদর্শ পরবর্তী আদ্দোলনসমূহে প্রেরণা যুগিয়েছিল।

    আরো দেখুনঃ

    নবম(৯ম) শ্রেণি  ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা ৪র্থ সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট,  class 9 history assignment 4th week

    Leave a Reply