সপ্তম শ্রেণি ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা এসাইনমেন্ট-১

সপ্তম  শ্রেণি ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা এসাইনমেন্ট-১

সপ্তম  শ্রেণি ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা এসাইনমেন্ট-১

আরো পড়ুনঃ

শিরোনামঃ ১ নং এসাইনমেন্ট ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা

শিক্ষার্থীরা তোমরা নিজেরা এসাইনমেন্টটি একটু পরিবর্তন করে লিখলে গ্রহণযোগ্যতা বেশি হবে। এটা মাথায় রেখ। তবে পুরোপুরি কপি করলেও সমস্যা নাই

 আকাইদ কী?

আকাইদ শব্দটি “আকিদাহ” শব্দের বহুবচন । আকিদাহ অর্থ “বিশ্বাস” । আর আকাইদ, অর্থ হল “বিশ্বাসমালা” । ইসলামের মুল বিষয়গুলো যেমন : তাওহিদ, রিসালাত, আখিরাত, আসমানি কিতাব, ফেরেশতা ইত্যাদির উপর বিশ্বাস স্থাপন করার নাম আকাইদ। 

তাওহিদে বিশ্বাস করা প্রয়োজন কেন?

তাওহীদ হল আকাইদের সবপ্রথম ও সবপ্রধান বিষয় । তাওহীদ শব্দের অর্থ হল . “একত্ববাদ”। মহান আল্লাহ এক ও জঅহ্থিত্তীয় এবং তাঁর কোন শরিক নেই, এই বিশ্বাসের নাম হল তাওহীদ ।

পবিত্র কুরআনে মহান আল্লহ বলেনঃ ” তিনিই আল্লাহ । তিনি ব্যতীত আর কোনো ইলাহ নেই” (সুরা আল-বাকারা, আয়াত ২৫৫) .

সুতরাং তাওহীদে বিশ্বাস করা মানুষের জন্য খুবই প্রয়োজন । কারনঃ ক) ইসলামের সকল বিধি-বিধান তাওহীদের উপর প্রতিডিত । আর ইসলামের মূল বিষয় হল সালাত, যাকাত, সাওম, হজ – সকল ইবাদতই এক জাল্লাহুর জন্য ।

খ) মুসলিম হওয়ার পূর্ব শর্ত হলো ঈমান আনা । আর ঈমানের শুরু হুল তাওহীদে বিশ্বাস করা । যতক্ষণ পর্যন্ত কেউ তাওহীদে বিশ্বাস করবে না সে মুমিন বলে গণ্য হবে না। 

গ) তাওহীদে বিশ্বাসী মানুষকে দুনিয়া ও আখিরাতে সফলতা এনে দেয়। কেননা, ভওহীদে বিশ্বাসী মানুষ সকল প্রকার অন্যায় ও পাপ কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখে করে। তাওহীদে বিশ্বাসী মানুষ বিপদ আপনে, দুঃখ-কষ্টে হতাশ না হয়ে আল্লাহর উপর ভরসা রাখে।

সুতরাং আমাদের তাওহীদ বিশ্বাস করা প্রয়োজন, শুধু মুখে নয় বরং অন্তর থেকে বিশ্বাস করতে হবে। তবেই আমরা দুনিয়া ও আখিরাতে সফলকাম হতে পারবো।

কুফরির পরিণাম ব্যাখ্যা কর

কুফর শব্দের অর্থ হল অবিশ্বাস করা. অস্বীকার করা, গোপন করা, ঢেকে রাখা । কুফর হল ইমানের বিপরীত । অর্থাৎ তাওহিদ, রিসালাত, আখিরাত, আসমানি কিতাব, ফেরেশতা, আল্লহার হুকুম আহকাম ইত্যাদি অবিশ্বাস করাই হল কুফর বা কুফরি করা। যে ব্যক্তি কুফরি করে তাকে বলা হয় কাফির। আল্লাহ তাআলাকে যারা অস্বীকার করবে তাদের ভয়াবহ পরিণতি সম্পর্কে কুরআন এবং হাদিসের কিছু বর্ণনা তুলে ধরা হলো-

“নিশ্চয় মুশরিক ও আহলে কিতাবের যারা কুফরি করেছে তাদের স্থান জাহান্নামে ৷ সেখানে তারা চিরস্থায়ীভাবে অবস্থান করবে । তারাই হলো সবনিকৃষ্ট সৃষ্টিজীব।” (সুরা- বাইয়্যিনা, আয়াত-৬) আখিরাতে কাফিরদের স্থান হবে জাহান্নামে । এবং সেখানে তারা সারাজীবন থাকবে। এছাড়া দুনিয়াতেও কাফিরদের জন্য আযাব রয়েছে । আল্লাহ বলেন: “আর যদি জনপদসমূহের অধিবাসীরা ঈমান আনত এবং তাকওয়া অবলম্বন করত তাহলে আমি অবশ্যই আসমান ও জমিন থেকে বরকতসমূহ তাদের উপর খুলে দিতাম; কিন্তু তারা অস্বীকার করল । অতঃপর তারা যা অর্জন করত তার কারণে আমি তাদেরকে পাকড়াও করলাম ।” (সূরা আল আ’রাফ, আয়াত ৯৬) এই আয়াত থেকে আমরা বুঝতে পারি যারা কুফরি করে তারা দুনিয়াতে আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত হয় এবং পরকালেও ভোগ কঠিন আযাব ।

শিরকের কুফল ও পরিনতি বর্ণনা কর |

শিরক শব্দের অর্থ হল অংশীদার সাব্যস্ত করা. সমকক্ষ মনে করা । ইসলামি পরিভাষায় আল্লাহ তাআলার সাথে অন্যকিছুকে অংশীদার সাব্যস্ত করা বা মনে করাকে শিরক বলে । যে শিরক করে তাঁকে মুশরিক বলে । শিরক হল তাওহীদের বিপরীত । শিরকের কুফল ও পরিণতি খুবই ভয়ানক । পবিত্র কুরআন মজিদে শিরকে সবচেয়ে বড় যুলুম বলা হয়েছে। “নিশ্চয় শিরক করা চরম যুলুম |” (সূরা লুকমান, আয়াত ১৩)

শিরকের কুফল: শিরকের সবচেয়ে বড় কুফল হল এর মাধ্যমে আল্লাহর সাথে অন্যায় আচরণ এবং বেয়াদপি করা হয় । কেননা সকল ইবাদাত এবং প্রশংসার একমাত্র হকদার হলেন মহান আল্লাহ তায়ালা । তাছাড়া শিরক একটি মযাঁদাহানিকর কাজ । মুশরিকরা শিরকে লিপ্ত হয়ে নিজ হাতে তৈরি করা অন্য সৃষ্টির কাছে মাথা নত করে । এর ফলে মানুষের (সৃষ্টির সেরা জীব বা আশরাফুল মাখলুকাত) মযাদা ক্ষুন্ন হয় । শিরকের মাধ্যমে সামাজিক বিশৃখলা সৃষ্টি এবং ভ্রাতৃত্ববোধ নষ্ট হয়। বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় শিরকের অনেক নমুনা লক্ষ্য করা যায় যেমন: মানুষ যখন নিজের প্রবৃত্তির অনুসরণ করে তখন সে শিরকে লিপ্ত হয়। আল্লাহ বলেন: “আপনি কি তাকে দেখেন না যে তার প্রবৃত্তিকে উপাস্যরূপে গ্রহণ করে?” (সুরা আল ফুরকান, ২৫ : ৪৩)

এখানে ইসলাম ও শরীয়তবিরোধী কোন প্রবৃত্তির অনুসারীকে প্রবৃত্তির পূজারী বলা হয়েছে । আমাদের মুসলিম সমাজে দেখা যায় নিজের খেয়ালখুশির অনুসরণ করে তা ইসলাম ও শরীয়তের বিধান বানিয়ে দেই । তাছাড়া জ্যোতিষশান্ত্র, ভাগ্যগণনা, তাবিজ, কবচ, ঝাড়ফুঁক, বশীকরণ, লোক দেখানো ইবাদাত বা রিয়া ইত্যাদিও শিরকের সমতুল্য । দুঃখের বিষয় আমাদের সমাজে এইসবের চিত্র ব্যাপক।

শিরকের পরিণতি: শিরকের পরিণতি অনেক ভয়াবহ ৷ শিরকের শেষ ঠিকনা হল জাহান্নাম । শিরকের অপরাধ আল্লাহ ক্ষমা করেন না। আল্লাহ বলেনঃ “আল্লাহ তাঁর সাথে শরীক করার অপরাধ অবশ্যই ক্ষমা করবেন না, কিন্তু তিনি যাকে ইচ্ছা এর চেয়ে কম (অপরাধ) ক্ষমা করে দেন।” (সূরা আন নিসা, ৪ : ৪৮)

আল্লাহ শিরককারীর জন্য জান্নাত হারাম করেছেন । তাদেরকে জালিক বা অত্যাচারী ঘোষণা করে তাদের জন্য কোনো সাহায্যকারী থাকবে না বলেও ঘোষণা করেছেন।

আল্লাহ বলেন: “যে ব্যক্তি আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক করেছে; আল্লাহ তার ওপর জান্নাত হারাম করে দিয়েছেন। তার পরিণতি হবে জাহান্নাম । এ সব জালিমদের জন্য কোনো সাহায্যকারী নেই” । (সরা আল স্বায়েদাহ, ৫: ৭২)

আল্লাহ শিরকের ভয়াবহতা উল্লেখ করে করে পরবর্তী নবিদেরকে সতর্ক করেছেন । যার। শিরক করে আল্লাহ তাদের সব ভাল আমল বরবাদ করে দিবেন বলে সুরা আনআ’ম এর ৮৮ তম আয়াতে বলেছেন।

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি শিরক করা অবস্থায় মারা যাবে সে জাহান্নামে প্রবেশ করবেনা ।’ (বুখারি ও মুসলিম)

সুতারং আমরা শিরক থেকে নিজের দূরে রাখবো এবং মহান আল্লাহর কাছে শিরক থেকে আশ্রয় চাইবো ।

Leave a Reply