বাংলা সাহিত্যের যুগ বিভাগ কয়টি ও কি কি 🟧 চর্যাপদ বাংলা সাহিত্যের আদি নিদর্শন। ‘চর্যাপদ’ থেকে বর্তমান কাল পর্যন্ত বাংলা সাহিত্যকে তিনটি যুগে ভাগ করা হয়েছে। ১. প্রাচীন যুগ- ড. সুনীতিকুমার চট্ট্রোপাধ্যায়ের মতে, ৯৫০ খ্রি. থেকে ১২০০ খ্রিষ্টাব্দ। ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ’র মতে ৬৫০ খ্রি. থেকে ১২০০ খ্রি.। প্রাচীন যুগের নিদর্শন- চর্যাপদ। এর ভাষা সান্ধ্য বা আলো আঁধারির ভাষা। ২. মধ্যযুগ- ১২০০ খ্রি. থেকে ১৮০০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত। মধ্যযুগের বাংলা ভাষার দুটি স্তর- (i) মধ্যযুগের আদিস্তর- চতুর্দশ ও পঞ্চদশ শতাব্দীকাল। এ স্তরের ভাষায় পশ্চিমবঙ্গের উপভাষার প্রয়োগ ও সংস্কৃত শব্দের বহুল ব্যবহার হয়। এ স্তরের সাহিত্যিক নিদর্শন- → শ্রীকৃষ্ণকীর্তন - বডু চন্ডীদাস → শ্রীকৃষ্ণ বিজয় - মালাধর বসু → রামায়ণ পাঁচালী - কৃত্তিবাস → মহাভারত পাঁচালী - কবীন্দ্র পরমেশ্বর, শ্রীকর নন্দী → মনসামঙ্গল - নারায়ণদেব, বিপ্রদাস, বিজয়গুপ্ত → চন্ডীমঙ্গল - মাণিক দত্ত, মুকুন্দরাম চক্রবর্তী। মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের দুটি ধারা: (ক) কাহিনী কাব্য (খ) গীতিকাব্য। মধ্যযুগে নবজাগরণের মন্ত্রধ্বনি নিয়ে আগমন ঘটে শ্রীচৈতন্যকাব্য (১৪৮৬-১৫৩৩)। শ্রীচৈতন্যদেবের নামানুসারে মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যকে তিনটি যুগে বিভক্ত করা হয়। (ক) চৈতন্য পূর্ববর্তী যুগ (১৩৫১-১৫০০ খ্রিস্টাব্দ) (খ) চৈতন্য যুগ (১৫০০-১৬০০ খ্রিষ্টব্দ) (গ) চৈতন্য পরবর্তী যুগ (১৬০১-১৭৬০ খ্রিস্টাব্দ) বৈষ্ণব পদাবলী- বাংলা ও মৈথিলী ভাষার সংমিশ্রণে ব্রজবুলি ভাষায় বৈষ্ণব পদাবলী লেখা হয়েছে। (ii) মধ্যযুগের অন্ত্যস্তর- ষোড়শ-সপ্তদশ-অষ্টাদশ শতাব্দী। ষোড়শ শতাব্দী-বাংলা ভাষায-আরবি-ফারসি শব্দের প্রভাব। বাংলা ভাষার মার্জিত রূপ লাভ-ভারত চন্দ্র রায়গুণাকরের হাতে। ৩. আধুনিক যুগ-১৮০১ খ্রিষ্টাব্দ থেকে সাম্প্রতিক কাল পর্যন্ত প্রবাহমান। এ সময়ে বাংলা গদ্য সাহিত্যের সূচনা, বিকাশ-পরিণতি ঘটে। বাংলা গদ্য সাহিত্যের ভাষারীতি দুটি- সাধু ও চলিত।